csb24.com::
নাসির হোসেনের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ভারতীয় ‘এ’ দলকে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৬৫ রানে হারালো বাংলাদেশ ‘এ’ দল। সেই সাথে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে সমতা আনলো মুমিনুল হকের দল। আজ ব্যাঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে সাত নম্বরে ব্যাট করতে নেমে আগে ১০২ রানে অপরাজিত থাকেন নাসির। এরপর ১০ ওভারে ৩৬ রানে ৫ উইকেট শিকার করে স্বাগতিক ‘এ’ দলকে হার মানতে বাধ্য করেন। টস হেরে আগে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ২৫২ রান করেছিল সফরকারী বাংলাদেশ দল। জবাবে, ৪২.২ ওভারে ১৮৭ রানে অল আউট হয় ভারত ‘এ’ দল।
নাসির ব্যাট হাতে প্রথমে সেঞ্চুরি করেছেন। প্রথম ম্যাচেও ফিফটি করেছিলেন তিনি। তিনটি চমৎকার জুটি হয়েছে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের ইনিংসে। প্রথমে ৬০ রানের জুটি গড়েছেন সৌম্য সরকার (২৪) ও এনামুল হক (৩৪)। দ্বিতীয় উইকেটে দলকে ভিত্তি দিয়েছেন তারা। এরপর একপর্যায়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে মুমিনুল হকের দল। ২২ রানে হারিয়ে ফেলে ৪ উইকেট। ৮২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুকতে থাকে। ষষ্ঠ উইকেটে ৭০ রানের জুটি গড়ে ওখান থেকে দলকে টেনে তোলেন নাসির ও লিটন দাস। প্রথম ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও রান পেয়েছেন লিটন। করেছেন ৪৫ রান। তার বিদায়ের পর সপ্তম উইকেটে আরাফাত সানির (১৭) সাথে ৫০ রানের জুটি গড়েন নাসির।
দল যখন ধুকছে তখন নাসির ব্যাট করতে নামেন কঠিন পরিস্থিতিতে। কিন্তু সেই পরিস্থিতিতে মানিয়ে নিয়ে দলের স্কোরিং রেট ধরে রেখেছেন। একাধিক জুটি গড়েছেন। ভারতীয় বোলারদের হতাশ করেছেন। নাসিরের ব্যাটিংটা ছিল আক্রমণাত্মক। বাংলাদেশ যে বিপদে সেটা বুঝতে দেননি তিনি। সাত নম্বরে নেমে সেঞ্চুরি করার দারুণ কৃতিত্ব তার। রুবেলকে নিয়েও অবিচ্ছিন্ন নবম উইকেটে ৪০ রানের জুটি গড়েছেন নাসির। ৯৬ বলে ১২টি চার ও ১টি ছক্কার মারে ১০২ রানে অপরাজিত থাকেন নাসির। রিশি ধাওয়ান তিনটি ও কার্ন শর্মা দুটি উইকেট নেন।
জবাবে, ভারতীয় ‘এ’ দলের শুরুটা ছিল চমৎকার। তারা আগের ম্যাচে তিন শ’র বেশি রান করেছে। তাই ২৫৩ রানের টার্গেটটা তাদের জন্য অনেক বড় ছিল না। শুরুটাও ভালো হয় তাদের। রুবেল হোসেন এই ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়েছেন। প্রথম আঘাত হানেন তিনি। ওপেনার মায়াঙ্ক আগারওয়ালকে (২৪) দলের ৩১ রানের সময় ফিরিয়ে দেন রুবেল। উন্মুক্ত চাদ ও মনিশ পান্ডে ৮৮ রানের জুটি গড়ে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন বাংলাদেশ ‘এ’ দলের সামনে। কিন্তু এরপর রুবেল ও নাসির মিলে হামলে পড়েন স্বাগতিকদের ওপর।
পেস ও স্পিনের আক্রমণে দিশেহারা হতে থাকে ভারতীয়রা। ২৮ ওভারে ১ উইকেটে ১১৯ রান ছিল স্বাগতিকদের। ২ উইকেটে ১৩৭ রান ছিল তাদের। সঠিক পথেই ছিল তারা। কিন্তু এই ম্যাচের অধিনায়ক চাদকে ৫৬ রানে ফিরিয়ে দেন নাসির। এটা তার প্রথম শিকার। এরপর রুবেল মনিশকে তুলে নেন ৩৬ রানে। ৩৪তম ওভারে নাসির তুলে নেন সুরেশ রাইনা (১৭) ও করুন নাইরকে (৪)। ২০ রানের মধ্যে ভারতের ৬ উইকেট তুলে নেন রুবেল ও নাসির। এরপর আর ফেরার উপায় থাকেনি স্বাগতিকদের। গুরকিরাত সিং ৩৪ রান করলেও ভারতের ৫ নম্বর থেকে শেষ পর্যন্ত কোনো ব্যাটসম্যান উইকেটে দাঁড়াতে পারেননি। দুই প্রান্ত থেকে নাসির ও রুবেল উইকেট ভাগাভাগি করার খেলায় মেতেছিলেন। শেষ পর্যন্ত বেশিদূর আর যেতে পারেনি ভারত ‘এ’। কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের দলকে মাটিতে নামিয়ে এনে বাংলাদেশ ‘এ’ দল পায় দারুণ এক জয়।
বাংলাদেশের বোলারদের কথা আলাদাভাবে উল্লেখ করতে হয়। পেসার রুবেল ৯ ওভার বল করেছেন। ৩৩ রান দিয়েছেন। নিয়েছেন ৪ উইকেট। নাসির ৫ উইকেট। দুজনে মিলে নিয়েছেন ৯ উইকেট। আল আমিন রান বেশি দিলেও একটি উইকেট নিয়েছেন। শফিউল ৭ ওভারে ২ মেইডেন দিয়ে ৩২ রান দিয়েছেন। আরাফাত সানি ৮ ওভারে ২৯ রান দিয়েছেন।
পাঠকের মতামত